Wednesday, January 15, 2014

ভালোবাসা!!!!!!!!!!!!!

:হ্যালো,ফোন উঠাচ্ছনা কেন?
:আমি টিউশনিতে আছি।
:ছাত্র না ছাত্রী?
:ছাত্রী,তামান্না।
:কেন ছাত্রী পড়াইতেছ?তোমার কথা জানে?ওকে আমার কথা বল এখনি।
:আজব তো,ছাত্রীকে আমি গণিত পড়াচ্ছি,প্রেমবিদ্যা না যে তোমার কথা বলব!!

সাহেদ ফোনটা রেখে দিয়ে সাইলেন্ট করে রাখল।সুইস অফ করেও রাখতে পারছেনা জেরিনের কথা ভেবে।
জেরিনের সাথে সাহেদের দুই বছরের রিলেশন।মান অভিমানের সম্পর্কে বেশিরভাগ সময় সাহেদই কম্প্রোমাইজ করে।

গ্রাম থেকে পড়াশুনার জন্য হঠাৎই শহরে আসা।বাসার অবস্থা ভাল না।টুকটাক টিউশনি করে পড়ার খরচ চালাতে হয়।শহরে নতুন এসে টিউশনি পাওয়া অত সোজানা।আর যে টিউশনি পেয়েছে তা একটা মেয়ের্।প্রেমিকার দাবি এই টিউশনি ছেড়ে দিতে হবে।

মেয়েদের মন যে,এত সন্দেহপ্রবণ তা এখন হারে হারে টের পাচ্ছে।এই টিউশনি ছেড়ে দিলে সে কিভাবে চলবে।ভালই বিপদে পড়েছে।

এরপর আরো কিছুদিন কেটে আছে।সাহেদ এর সাথে জেরিনের সম্পর্কটা খারাপ হতে হতে চরমে।জেরিন এবার ভালই বেকে বসেছে।হয় প্রাইভেট ছাড়বে নাহলে জেরিনকে ছাড়তে হবে।কি করবে ও বুঝতে পারছেনা।
তামান্নার টিউশনি ছেড়ে দিবে বলে ভাবছে।কিন্তু তামান্নার সামনে এসএসসি পরীক্ষা।এতদিন পড়িয়ে বাদ দিলে ওরাই কি ভাববে।
কি ভাবে ভাবুক।এত দিনের প্রেমের জন্য তো একটু আধটু ছাড়তেই হবে।কিন্তু সামনে ফরমফিলাফ।মেসের ও দুমাস ভাড়া বাকি।এবার বাসা থেকেই কিছু টাকা আনতে হবে।এইভেবে বাসায় ফোন দিল সে।অনেকক্ষণ রিং হবার পর ছোটবোনটা ধরল।
:কিরে কেমন আছিস?
:ভাল নাই ভাইয়া।
:কি হইছরে আপু?
:আব্বুর হাপানির টান খুব বাড়ছেরে ভাইয়া।ইনহেলার টাও শেষ হয়ে গেছে।
:একটা ইনহেলার কিনে নিতে বল।
:ভাইয়া তোকে তো বলাই হয়নাই,আব্বুর দোকানে চুরি হইছে।রাতের বেলা হাপানির টানে বাড়ি আসছে তখনি চুরি হইছে।
:আমাকে বলিসনাই কেন?
:আম্মু নিষেধ করছিল,তোর পড়ার ক্ষতি হবে।

এরপর বাড়ি থেকে টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসেনা।এদিকে প্রাইভেট নতুন খোজারও সময় নাই। সামনে পরীক্ষা।বাধ্য হয়েই আগের টিউশনিতে গেল।সেখান থেকেই দুমাসের অগ্রীম টাকা নিয়ে ফর্মফিলাফ করল।জেরিনকে বোঝান গেলনা।ও ফোনকরা বন্ধ করে দিল।পরীক্ষা চলছিল।আর বাবার কথা ভেবে পড়ায় মনোযোগ দিল।পরিক্ষা শেষ হলে জেরিনকে গ্রামে গিয়ে বোঝান যাবে।

একমাস পর পর দুইদিনের জন্য বাড়িতে গেল।ছোটবোন এগিয় এসে ঘরে ডেকে নিয়ে বলল,
:ভাইয়া তোর জন্য একটা চিঠি আছে।
:আচ্ছা পড়ে পড়ব আগে জেরিনদের বাসায় গিয়ে ওকে বিকালবেলা নদীরপাড়ে নিয়ে আসবি,যা বলে আয়।
:ভাইয়া চিঠিটা জেরিন আপুই দিছে।
:তুই বলে আয় আগে।
:আজকে ওর গায়ে হলুদ ভাইয়া।ওর বাবা দুবাই প্রবাসীর সাথে বিয়ে ঠিক করেছে।বিয়ে হলে ওরা দুবাই চলে যাবে।

সাহেদ চিঠিটা পড়া শুরু করল,
"শাহেদ আমাকে ক্ষমা কর্।তুমি আমাকে অনেক ভালবাস আমি জানি।তোমার একটু বেশি ভালবাসা পাবার জন্যই আমার অভিমান ছিল।আমার কিছু করার ছিলনা।বাবার দুবার হার্ট এটাকের পর আমাকে জোড় পুর্বক বিয়ে দেয়া হচ্ছে।অবশ্য আমি তোমার ভবিষ্যৎ আর বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আমি না বলতে পারিনি।তোমার কোন দোষ নেই।ভাল থেক আর ভাল করে পড়াশুনা কর্।আর পাড়লে ক্ষমা করে দিও"

সাহেদ বিকেল আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল।এই পৃথিবী সাহেদদের জন্যনা।ছেড়া স্বপ্ন আর অভিমানগুলাকে অনেক মিস করবে এটা ভাবতেই সাহেদের চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগল।

- Collected

Saturday, January 11, 2014

" বৃষ্টি ও আমি "

বৃষ্টিস্নাত সকাল, টিপ টিপ বৃষ্টিতে মুখরিত সময়, একটি ছেলে ছাতা নিয়ে হাঁটছে, টিপ টিপ বৃষ্টির মাঝে, মেঘলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আনমনে চিন্তা করছে... হঠাত্‍ ছেলেটির নজর গেল ২টি পায়ের উপর। ছেলেটি মেয়েটিকে দেখার পর থেকে চিন্তা করল, এই মেয়েটা কি আমার মত পাগল??? বৃষ্টির মাঝে হাঁটতে বের হয়। আরো ভাবলো যে, তার পিছু নেবে কিনা! আরেকটি চিন্তা মাথায় এল এবং চিন্তাটি অহংকার এর পর্যায়ে নিয়ে গেল তাকে, সে ভাবল, ১টা মেয়ের পেছনে পেছনে যাবে কি বুয়েট এর এত মেধাবী প্রোগ্রামার... যে কি না মেয়েদের কখনই পাত্তা দেয় না! তারপর ছেলেটি বাসায় চলে এল।

কিন্তু বাসায় ফিরে সেই ছোট্ট ঘটনাটি ছেলেটির কাছে বড় হয়ে ধরা দিতে থাকল! অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেয়েটির কথা ঘুরে ফিরে আসতে লাগল!! তার মত এমন পাগলাটে মেয়ে সে দেখে নি! আরেকটি খেয়াল মাথায় এল, সে কি বৃষ্টিতে হাঁটতে বেড়িয়েছে তার মত নাকি কাজে যাচ্ছিল, এতকিছু কি ছেলেটির নিছক কল্পনা??? মেয়েটি চেহারার মাঝে মায়াবি ভাব তার চোখ আটকে গেল! তার ভাবনাগুলা আরো বিস্তৃত হতে লাগল, ছেলেটি কখনও মেয়েদের ঐই ভাবে দেখে নি, তাই হয়তো মেয়েটিকে তার এমন ভাল লাগছে। সারাদিন তো প্রোগ্রামিং ছাড়া কিছুতেই মন বসে না, শুধুই নিজের ব্যস্ত সময় থেকে অবসর খুঁজে পায় বৃষ্টির দিনে পথ চলার মাঝে। ছেলেটি সিন্ধান্ত নিল, মেয়েটির সাথে আবার দেখা করবে, তাকে জিজ্ঞাসা করবে, মেয়েটি কি ছেলেটির মতই পাগল! কিন্তু সমস্যাটি হল মেয়েটির দেখা পাবে কোথায়? তা নিয়ে ছেলেটি ভাবতে লাগল। দীর্ঘ ৫টা দিনের অপেক্ষা, তারপরও মেয়েটির নেই কোন দেখা! যে জায়গাটিতে দেখা হয়েছে সে জায়গাটিতেও দেখা হল না তার!

সে দিন হতাশ মন নিয়ে একা পথ হেঁটে যাচ্ছে! আকাশের কালো মেঘ ঘনিয়ে টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে। দূর থেকে ছেলেটি দেখতে পায় মেয়েটি ছাতা নিয়ে হাঁটছে! ছেলেটি হতবাক হয়ে গেল! কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। যতবারই মেয়েটির কাছে যেয়ে Excuse me বলতে যাবে, ছেলেটির বুকের হৃদপিন্ডের শব্দ বেশী অনুভব করতে পারায় আর বলতে পারে না। এভাবে ভাবতে ভাবতে মেয়েটি কিছু দূর এগিয়ে গেল। বুকে অনেক সাহস জমা করে মেয়েটির কাছে যাওয়া জন্য একটু জোরে পা চালাল! ছেলেটি বলল, "এই যে শুনছেন! আপনার সাথে আমার কথা আছে!!! আপনি এরকম করে বৃষ্টির মধ্যে হাঁটাহাটি করেন কেন? হাঁটাহাটি করলে ঠাণ্ডা লেগে যাবে!"

অচেনা এক ছেলের মুখ থেকে এই টাইপ কথা শুনে মেয়েটি অবাক!
মেয়েটি উল্টা প্রশ্ন করল, "আপনি তো পাগল দেখছি! আমার মাথায় তো ছাতা আছে!! ভিজছেন তো আপনিই!!! ঠান্ডা তো আপনার লাগবে। উল্টো আমাকে এটা বলছেন!" মেয়েটির মুখ থেকে এরকম কথা শুনে ছেলেটি অপ্রস্তুত হয়ে গেল, কি যে বলবে কিছুই বুঝছে না! ছেলেটি কিছু বলার অপেক্ষায় না থেকেই মেয়েটি হাঁটা শুরু করল। ছেলেটি পুনরায় দৌড়ে গিয়ে বলল, "ইয়ে..মানে..আপনার বাসাটা কোথায়?" চৌরাস্তার পাশের গলিতে না?? মেয়েটি সরাসরি বলে দিল,'না!' ছেলেটি বলতে থাকল,"আমার ১ বন্ধুর পাশের বাসায় হয়তো আপনাকে আমি দেখেছি!" ছেলেটি আন্দাজে কথা বলতে থাকল! মেয়েটি কিছুই বুঝতে পারল না। মেয়েটি বলল, "আপনার মাথা মনে হয় খারাপ হয়ে গেছে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে! বাসায় যান, বিশ্রাম নিন।" ছেলেটি পর পর ৪টা হাচ্চি দিল! ছেলেটির এই অবস্হা দেখে মেয়েটি বলল, এখনও কি আরো ভিজতে চান! আপনার বাসা কই? এখান থেকে যেতে কতক্ষণ লাগবে?" ছেলেটি উত্তর দিল,"আমার কিচ্ছু হবে না! আমি হেঁটে যেতে পারব!" মেয়েটি বলল,"আপাতত ছাতার নিচে আসেন, যতদূর সম্ভব এগিয়ে দেই!"

তারা ২জনই হাঁটছে ১ছাতার নিচে, কেউ কারো সাথে কথা বলছে না, ছেলেটি মাঝে মধ্যে আড় চোখে মেয়েটিকে দেখছে,আস্তে আস্তে মেয়েটির বাসা চলে আসল। ছেলেটির বাসা আরো একটু দূরে হওয়ায় মেয়েটি ছাতাটি তাকে দিয়ে বাসায় ঢুকে গেল। টানা ৪ দিন পর জ্বর থেকে উঠে ছেলেটি ছাতা ফেরত দিতে গেল সেই জায়গাটিতে, সেই সময়ে! মেয়েটি আর আসে না। ছেলেটি হতাশ। চিন্তা করছে মেয়েটির বাসায় যাওয়াটা ঠিক হবে কিনা! কিন্তু কোন একটা কাজের কথা চিন্তা করে আর যাওয়া হল না! ২দিন পর আবার বৃষ্টি শুরু হল, ছেলেটি সেই ছাতাটি নিয়ে বের হল.. সেই জায়গাটিতে অপেক্ষা করতে লাগল, তাও মেয়েটির দেখা পেল না! মেয়েটির বাসার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখল যে মেয়েটি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত বার করে বৃষ্টির পানি স্পর্শ করছে! ছেলেটিকে দেখে হাতের ইশারায় তাকে দাঁড়াতে বলে নিচে নেমে এল। ছেলেটি জিজ্ঞাসা করল,"আজ আসলেন না কেন?"

মেয়েটি মৃদ্যু হেসে বলল,"আমার ছাতাটি আপনি রেখে দিয়েছেন!"
ছেলেটি হাসল আর বলল,"ওহ!আমি খুবই দুঃখিত।"
মেয়েটি উত্তর দিল,"না থাক, এত দুঃখ পেতে হবে না। কিন্তু এভাবে বৃষ্টিতে আর ভিজবেন না! আপনার মনে হয় ঠান্ডার সমস্যা আছে!"
ছেলেটি হুট করে বলে ফেলল, তাহলে আপনাকে দেখতে পাব কি করে?"
মেয়েটি জিজ্ঞাসা করল,'Sorry??'
ছেলেটি বলল,"কিছু না, এমনিই বললাম আর কি!"
তখন মেয়েটি বলল, "আচ্ছা,আজকে যাই তাহলে, একটু কাজ আছে! আপনার নামটাই তো জানা হল না!"
ছেলেটি উত্তর দিল, 'মেঘ'!উত্তর শোনার পর মেয়েটি কিছুক্ষণ চুপ রইল। মেয়েটি চলে যেতে লাগল কিছু না বলে। ছেলেটি মেয়েটির নাম শুনতে চাইল!
তখন মেয়েটি বলল,"আপনার নামটির সাথে আমার নামটি সম্পৃক্ত!" ছেলেটি সারাদিন চিন্তা করতে থাকল, তার নামকি আসলেই বৃষ্টি??? ছেলেটি এর পর আরেকটি মেঘে ঢাকা বৃষ্টির দিন এর অপেক্ষায় রইল..।।
সংগৃহীত