Monday, May 2, 2016

ছায়া মানব

নিহার সাথে প্রথম দেখা এক বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায়। তখন ঢাকা কলেজে পড়তাম,অনার্স তৃতীয় বর্ষে।খালাত বোনের বিয়ের দাওয়াতে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহের গৌরীপুর।গৌরীপুর বেশ ছিমছাম এলাকা। আমি তখন প্রথম প্রেমে সদ্য ছ্যাঁকা খাওয়া বিদ্ধস্ত যুবক।ভীর, হট্টগোলের চেয়ে এমন নিরিবিলি এলাকাই বেশ পছন্দের।বিকেল হলেই খালাত ভাইয়ের সাথে বেরিয়ে পড়তাম ঘুরতে।কোনদিন রেলস্টেশন, কোনদিন জমিদার বাড়ি,আবার কোনদিন উদ্দেশ্যবিহীন হাঁটাহাঁটি।এসব শুধুই নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা,আর কিছুনা। সেদিন বিকেলে হটাৎ এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল।
সন্ধ্যার আগে আগে যখন আমরা বের হলাম তখন প্রায় অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে।কারেন্ট ও নেই, চারদিকে বেশ স্যাঁতসেঁতে আর ধোঁয়াশা ধোঁয়াশা ভাব।রাস্তায় লোকজন প্রায় নেই বললেই চলে।সরকারি কলেজের গেটের সামনে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।দূর থেকেই দেখে কিছুটা উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল। কাছাকাছি যেতেই এগিয়ে আসল আমাদের দিকে।চোখমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। দূর থেকে খেয়াল করিনি, সাথে লাগেজ ও আছে। কাছে এসেই নাকেমুখে হড়বড় করে যে কথাগুলো বলল তার
মানে অনেকটা এরকম যে এখানে খালার বাসায় বেড়াতে এসেছিল।সারপ্রাইজ দিবে বলে জানিয়ে
আসেনি।কিন্তু এসে উল্টো নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে গেছে।বাসায় তালা,সবাই গেছে পাশের গ্রামে নানুর বাসায়।সেখানে যাওয়া বেশ সহজই,অটোরিকশা চলে এখান থেকে।কিন্তু রাস্তায় নামার সাথে সাথে বৃষ্টি শুরু হলে বাধ্য হয়ে আশ্রয় নেয় কলেজের বারান্দায়।আর সেখানেই ঘটে বিপদ।কোথা থেকে দুটো ছেলে এসে ছোঁ মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়েই গায়েব। টাকা মোবাইল সব ওই ব্যাগেই ছিল।এখন তা হারিয়ে না তো অটোরিকশায় উঠতে পারছে,না কাওকে ফোন করে জানাতে পারছে।
আমি পকেট থেকে মোবাইল বের করে দিলাম,বাসায় কথা বলল।তারপর একটা অটোতে তুলে ভাড়া দিয়ে দিলাম।অটো ভাড়া পনের টাকা,মোবাইলে কথা বলতে লেগেছে পাঁচ টাকা,মোট বিশ টাকা।এমন কোন বড় উপকার না।প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম কিছুদিন পর।
.............................................................................................
বেশ কিছুদিন যাবত প্রচণ্ড গরম পড়েছে।ফ্যান ছাড়া দুই মিনিট থাকা দায়।এমন ঠাঠাপড়া রোদের মধ্যে দুপুরবেলা বাসা থেকে বের হওয়াটা যুদ্ধ জয় করার মতোই কঠিন। কিন্তু কথায় আছে "ঠেলায় পড়লে বাঘও ঘাস খায়।"আমার অবস্থা অনেকটা ওরকম ই।রুমের ফ্যান ঘুরছেনা,গরমে টেকা দায়।বাধ্য হয়ে বের হলাম মেকানিক খুঁজতে। রাস্তার পাশে একের পর এক লেবুর শরবতের দোকান।আমি
সেগুলোর দিকে লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আর সকালের করা প্রতিজ্ঞার কথা ভাবছি।বাসার কাছেই বরফকল।আমি প্রতিদিন সকালে সেখানে বরফ তৈরির নোংড়া প্রক্রিয়া দেখি আর কখনো এসব শরবত না খাওয়ার প্রতিজ্ঞা করি।বলা বাহুল্য প্রতিজ্ঞা রক্ষা হয়না।আজ সকালেও একবার করেছিলাম।কিন্তু একটু পরেই আবার যথারীতি নিজেকে শরবতের গ্লাস হাতে আবিষ্কার করলাম।বোতলজাত কোল্ড ড্রিংক্স এর চেয়ে এসব লেবুর শরবতই আমার বেশি ভাল্লাগে।চোখমুখ বন্ধ
করে দুই গ্লাস খেয়ে ফেললাম।টাকা দিতে যাব, তখন দেখি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে টাকা বাড়িয়ে দিল। বুঝতে পারলাম না উনি কিসের টাকা দিচ্ছেন,উনাকে তো খেতে দেখলাম না।কৌতুহলবশঃত ভালোভাবে তাকালাম উনার দিকে।আরে!এ তো সেই মেয়ে,গৌরীপুরের।এত তারাতারি চিনতে পারায় নিজের স্মৃতিশক্তিকে নিজেই বাহবা দিলাম।মুখে রহস্যময় মিস্টি হাসি ঝুলিয়ে তাকিয়ে আছে মেয়েটা।
- আরে!আপনি সেই মেয়ে না?গৌরীপুর?ব্যাগ ছিনতাই?
=হ্যা।বাহ্!চিনিতে পেরেছেন তাহলে?
- হ্যা।আমার স্মৃতিশক্তি ভালো তা এখন কি শরবতের দাম দিয়ে সেই ঋণ শোধ করতে চাচ্ছেন? এভাবে তো হবেনা,আমার কাছে এখন টাকা আছে,তাছাড়া আমি এখন বিপদেও নেই।
মেয়েটি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলল।পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য বললাম
- আচ্ছা ঠিক আছে,টাকাটা আপনিই দিন,কেউ কিছু দিলে আমি আবার না করিনা।
আমি আবার হাঁটা শুরু করলাম।মেয়েটিও হাঁটছে  পাশাপাশি।
- আচ্ছা আপনার নামটাই তো জানা হল না?
=আমি নিহা।আপনি তো রাশেদ, তাই না?
কিছুটা অবাক হলাম,কিন্তু সেটা লুকিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম
-কিভাবে জানলেন?
=ফেসবুক থেকে।আপনার নাম্বার দিয়ে সার্চ দিয়ে আইডি পেয়েছি।রিকুয়েস্ট দিয়েছি সেই ছয়মাস আগে।
এতদিনে কত্তগুলো মেসেজ ও দিয়ে রেখেছি,অথচ আপনার কোন পাত্তাই নেই।
-আসলে ফেসবুক চালানো বাদ দিয়েছি।আচ্ছা আপনার নাম্বারটা দিয়ে যান।
পকেট থেকে মোবাইল বের করে বাড়িয়ে দিয়ে বললাম। এক মুহূর্ত চিন্তা করে নিহা তার মেহেদিরাঙা হাতের সরু সরু আঙুলগুলো চালাল ফোনের কি-প্যাডে।আমি অনেকটা মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে রইলাম সেদিকে।এত্ত সুন্দর হাত মানুষের হয়!অনেকদিন পর মনেহয় বুকে কিছুটা কাঁপন উঠল।
.
.
তারপর পার হয়েছে প্রায় মাসখানেক।আমি আর নিহা এখন বেশ ভালো বন্ধু।আমার অধিকাংশ সময়ই এখন কাটে ফেসবুকে।নিহাকে অনুরোধ করেছিলাম ওর হাতের ছবি প্রো পিক দিতে।সে অনুরোধ রেখেছে।আমি সারাদিন সেই ছবি দেখি।গাঢ় রঙের মেহেদি দেয়া দুটি হাত।সরু সরু
আঙুল।দেখতে দেখতে হারিয়ে যাই।মেসেজের রিপ্লাই দিতে আর মনে থাকেনা।এটা নিএ ঝগড়া হয়,রাগারাগি হয়।আমার সবই ভালোলাগে।সাদাকালো পৃথিবীটাকে এখন রঙিণ মনেহয়।
.
নিহা বেশ খ্যপাটে টাইপ মেয়ে।হুটহাট রাগ করে ফেলে কথায় কথায়।রাগ উঠলে যা ইচ্ছা তাই করে।সেদিন ও একটা নতুন ছবি পাঠাইছে,আমি হা করে সেটা গিলছিলাম।ওদিকে যে একের পর এক মেসেজ আসছে সেদিকে খেয়াল ই নেই।যতক্ষণে খেয়াল হল ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে।অর্ডার হল এখন ওর সাথে দেখা করতে যেতে হবে।দেখা করা পর্যন্ত ঠিকই ছিল,কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সাথে শর্ত যোগ হল যে হেঁটে যেতে হবে দেখা করতে।কি আর করা! ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রওনা হলাম ধানমন্ডি থেকে মিরপুর।ওদের বাসার গলির সামনে দাঁড়িয়ে পলিথিনের ভেতর থেকে মোবাইল বের করে কল দিলাম।পাঁচবার কল দেয়ার পর রিসিভ হল। রিসিভ করার পর বলল ফিরে যেতে, দেখা করবেনা।এটাই নাকি আমার শাস্তি ছিল।তারপর ও কেন যেন আমার রাগ হল না,ওর সবই আমার ভালোলাগে।
.
নিহা আমার চেয়ে মাত্র এক ব্যাচের জুনিয়র ছিল।ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ত।আমার অবস্থান থেকে ওকে পাওয়াটা বেশ অসম্ভব ই ছিল।তাই এবার নিজেকে যোগ্য করায় মনোনিবেশ করলাম।কোনভাবে প্রথমবারেই বিসিএসে টিকে যেতে পারলে, তবেই সহজ হবে নিহাকে আপন করে নেয়া।
বন্ধু, আড্ডা সব বাদ দিলাম।মেস ছেড়ে হোস্টেলের সিঙ্গেল রুমে উঠলাম।নিহার সাথে কথা বলা ছাড়া বাকি সময়টা পড়ালেখা করি।বই গাইড কিনে রুম ভর্তি করে ফেললাম। ভালোই কাটছিল সময়গুলো।মনের মধ্যে সবসময় একটি চাপা উত্তেজনা কাজ করত।কবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিহার সামনে দাঁড়াব, কবে ওকে আপন করে নিব। নিহা বলেছে ওর প্রেম ভালোবাসার প্রতি কোন ইন্টারেস্ট
নেই,একেবারে বিয়ে করে হাজব্যন্ডকে ভালোবাসবে। তাই ওদিকে কোন চিন্তা নেই অন্তত।
...................................................
...................................................
তারিফ ধরে নিয়ে আসল রবীন্দ্রসরোবর।ওর নাকি কি জরুরি কথা,মোবাইলে বলা যাবেনা। তারিফ হচ্ছে খালাত ভাই,সেই ময়মনসিংহের খালামনির।বুয়েটে সি এস ই পড়ে,আমার সাথেই মানে থার্ড ইয়ার।বেশ বোকাসোকা সহজসরল ছেলে।আমি কিছুটা ব্যাঙ্গ করেই বললাম
- বলেন দেখি এখন,আপনার কি এত জরুরি কথা।
=ভাই আমিতো ভালোবেসে ফেলছি।
বলে কি এই ছেলে! ভালোবেসে ফেলেছে?!মেয়েকে! সারাজীবন তো ওকে মহা আঁতেল বলেই চিনতাম।
-তাই নাকিরে?তা কার জীবন ধন্য করতে চলছিস?
এইবার ছেলে লজ্জায় চুপসে গেল।হাজারটা ওয়াদা করে অবশেষে ছোট্ট করে বলল
=নিহা।
শুনে আমার মাথাটা একটা চক্কর দিয়ে উঠল।কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করলাম
- কোন নিহা?ঢাকা মেডিকেল?
=হ্যা।
- ও কি ভালোবাসে তোকে?
শেষ আশাটুকু জিইয়ে রেখে জিজ্ঞাসা করলাম।কিন্তু আমার সবকিছু শেষ করে দিয়ে ও বলল, হ্যা।
মোবাইল বের করে ও ওদের কাপল ছবিগুলো দেখাল,কোথায় কোথায় যেন ঘুরতে গেছিল সেগুলো
দেখাল।আমি কিছুই দেখতে পারছিলাম না।কিছুই মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছিল না।
=জানিস ও না বলেছে তোকে এই বিষয়ে কিছু না জানাতে।তাই কি হয় বল? আমি কি আজ পর্যন্ত তোর কাছে কিছু লুকিয়েছি?
আমার খুব বলতে ইচ্ছা করল "এতদিন তো ঠিকই লুকিয়েছিস ব্যপারটা। "কিন্তু বললাম না।আমার এই ভাইটাকে আমি খুবই ভালোবাসি। কিন্তু আজ খুবই রাগ হচ্ছে ওর ওপর। জানি ও ইচ্ছা করে কিছু করেনি,ওর কোন দোষ নেই,তারপর ও।নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিনা।পেট উল্টে বমি আসছিল,এক ছুটে লেকের কিনারায় গিয়ে বমি করে ফেললাম।সবাই তাকিয়ে আছে।আমি উঠে
হোস্টেলের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম।তারিফ সাথে আসতে চেয়েছিল,আমিই জোড় করে আসতে দিলাম না।
.
হোয়াটস এপে আমার নিহার আরর তারিফের গ্রুপ ছিল একটা।সেখানেই নিহার সাথে ওর প্রথম আলাপ।কাহিনী যে এতদূর গড়িয়েছে বুঝতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে সব দোষ আমার।কেন ওদের পরিচয় করিয়ে দিলাম? মাসখানেক থেকে নিহার সাথে যোগাযোগ বেশ কমে গিয়েছিল।মেসেজের রিপ্লাই বেশ দেরিতে দিত।ফোন অনেকসময়ই ওয়েটিং পাওয়া যেত।জিজ্ঞাসা করলে বলত পড়া নিয়ে ফ্রেন্ডের সাথে ডিসকাস করছে।আমিও খুশিমনে পড়তে বসতাম।আর চিন্তা করতে পারছিনা,জট
পাকিয়ে যাচ্ছে সব।
.
মানুষের বদলাতে সময় লাগেনা।ইদানিং প্রায়ই রাতে মেসে ফেরা হয়না।গাঁজার আসর পার্মানেন্ট ঠিকানায় পরিণত হয়েছে।হোস্টেলে আসলে মাঝে মাঝে বইয়ের স্তুপের দিকে তাকিয়ে থাকি।ধূলো জমে গেছে। যাক,এদিকদিয়ে ভালোই হয়েছে।এত্ত এত্ত পড়াশুনার হাত থেকে তো রক্ষা পাওয়া গেছে।নিজেকে এটা বলেই সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করি,একটু হাসার চেষ্টা করি। কিন্তু হাসিগুলো কেমন যেন অপ্রকৃতস্থের মতো দেখায়। মাঝে মাঝে বন্ধুদের নাম্বার থেকে কল দেই নিহার নাম্বারে।অধিকাংশ সময়ই দেখি ওয়েটিং।মাঝে মাঝে রিং হয়,আমি দম বন্ধ করে অপেক্ষা করি।একসময় রিসিভ
হয়। একটা ঝঙ্কারতোলা কণ্ঠ কয়েকবার হ্যালো হ্যালো বলে।আমার বুকে কাঁপন ওঠে।কাঁপন মোটেও উপভোগ্য জিনিস না,আমি ফোন রেখে দেই।
.
মাঝে মাঝেই নিহাকে বলতে ইচ্ছা করে " নিহা তুমি তোমার ঋণ শোধ কর,সেদিনের সেই উপকারের ঋণ। আমাকে এমন এক ওষুধ দাও যেটা খেয়ে আমি তোমাকে ভুলে যাব।তোমার কিচ্ছু মনে থাকবেনা।"কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কিচ্ছু বলা হয়না।ওর সাথে চ্যাট ও হয়না প্রায় নয় মাস যাবত।
আমি ওর প্রোফাইলে ঢুকি।প্রো পিকে সুন্দর একটি হাত,মেহেদির গাঢ় রঙে রাঙানো হাত,চিকন চিকন আঙুল। সেই হাতকে আগলে রেখেছে আরেকটি হাত, আরেকটি সুন্দর পুরুষের হাত,একজন বুয়েটিয়ানের হাত।আমি দেখি,মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখি।
.........................................................
.........................................................
হাসপাতালের করিডোরে হাঁটাহাঁটি করছি।ভেতরে আই আই ইউতে তারিফ।ছাদ থেকে লাফ দিয়েছিল।অল্পের জন্য বেঁচে গেছে,কিন্তু অবস্থা বেশ খারাপ।হাত,পা কোমড় ভেঙে মরমর অবস্থা।
নিহা চলে গেছে আজ শেষরাতের ফ্লাইটে,দেশ ছেড়ে,তারিফকে ছেড়ে আমেরিকায় তার হবু বরের
কাছে।সেখানেই নাকি বিয়ে হবে।ভোররাতে সবাই যখন ঘুমে তখন হলের ছাদে গিয়ে লাফ দিয়েছে
তারিফ,আরেকটু হলেই সোজা উপরে চলে যেত। যেদিন প্রথম জেনেছিলাম আমি আর নিহাকে পাব
না,সেদিন খুব কষ্ট হয়েছিল,খুব।কিন্তু তবুও রাগ হয়নি নিহার ওপর।কিন্তু আজ সত্যিই মনে হচ্ছে আজ ওকে সামনে পেলে কিছু একটা করে ফেলতাম।
.
তারিফ আর ভার্সিটিতে যায় না।সারাদিন বাসায় বসে কাটায়।প্রায় একবছর থেকে এভাবেই চলছে।আমি প্রায়ই ওদেরবাসায় যাই। তখক দুইজন মিলে খুব হাঁটাহাঁটি করি। প্রায়ই রাস্তায় ও কাকে যেন খোঁজে এদিক ওদিক।আমার খুব মায়া লাগে।
.
ঢাকায় আমার রাতগুলো কাটে সিগারেট পুড়িয়ে। সিগারেটের ধোঁয়ায় আমার ছোট্ট রুম ভর্তি হয়ে যায়। প্রায়ই আমি বিভ্রান্ত হয়ে যাই।ধোঁয়ার মাঝে নিহাকে দেখতে পাই।ওকে অনুরোধ করি ফিরে আসতে।তারিফের হাতটা আবার ধরতে। ও রাজি হয়না।তবে আমার বিশ্বাস আমি একদিন ঠিক রাজি করিয়ে ফেলব নিহাকে। আমার বোকাসোকা ভাইটা আবার লজ্জা লজ্জা কণ্ঠে আমাকে ওদের কাহিনী শোনাবে।এবার আর এড়িয়ে যাব না,খুব মনোযোগ দিয়ে শুনব।প্রমিজ।